ছোট কিংবা বড় যেকোনো স্নানঘরই হতে হবে ঝকঝকে-তকতকে। তবেই না আপনার রুচিশীল মনের পরিচয় পাওয়া যাবে। আর একে সাজিয়ে রাখলে আপনার স্নানঘর হয়ে ওঠে দৃষ্টিনন্দন। যদি স্যাঁতসেঁতে স্নানঘর হয় তবে তো সেটা হবে রোগজীবাণুর ঘরবসতি। স্নানঘরের কোণায় কোণায় ময়লা জমে থাকলে তা থেকে ছড়াতে পারে রোগজীবাণু। রোগের বীজ। ফলে ঘরের মানুষ, বিশেষ করে ছোট্ট শিশুরা হয়ে উঠতে পারে অসুস্থ। কোনোভাবেই তাই স্নানঘর অপরিষ্কার রাখা যাবে না। আবার এমনভাবে ময়লা জমতে দেওয়া যাবে না, যাতে দুর্গন্ধ ছড়ায়। তাই স্নানঘর রাখতে হবে পরিচ্ছন্ন যেন পরিবারের সবাই সুস্থ স্বাভাবিক জীবাণুমুক্ত থাকতে পারে। স্নানঘরকে পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর রাখার বিষয়ে বলছিলেন অ্যাডভান্সড ক্লিনিং সার্ভিসেস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (প্রা.) লিমিটেডের সুপারভাইজার মো. মনিরুজ্জামান।
পরিচ্ছন্ন রাখতে নিয়মিত পরিস্কার করতে হবে স্নানঘর।
l প্রায় প্রতিদিনই স্নানঘর পরিষ্কার করতে হবে। সময় না পেলে সপ্তাহে অন্তত দু-তিনবার পরিষ্কার করা ভালো।
l বেসিন পরিষ্কারের ক্ষেত্রে প্রথমে বেসিনে পরিষ্কারক গুঁড়া সাবান ছিটিয়ে দিতে হবে। তারপর গ্রিন প্যাড দিয়ে পরিষ্কার করে মাজতে হয় বেসিনের প্রতিটি কোণা, যেন কোথাও অপরিষ্কার না থাকে।
l বেসিনের আয়না কাচ পরিষ্কারক দিয়ে মুছতে হবে।
l অনেক সময় হাত-মুখ ধুতে গেলে বেসিনের পাশে পানি পড়ে ভিজে যায়, তাই ভিজে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডাস্টার (পরিষ্কার সাদা কাপড়) ভিজিয়ে মুছে ফেলতে হবে। মোছার পর ডাস্টারটা শুকাতে দিতে হবে।
l স্নানঘরের মেঝে পরিষ্কারের বেলায় একটা বালতিতে দুই লিটার পানি নিয়ে সেটায় এক কাপ তরল পরিষ্কারক মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর সেটায় মপ ভিজিয়ে নিয়ে মেঝে পরিষ্কার করা হয়।
Advertisements
l মপ দিয়ে মেঝে মুছে মপের মাথা ওপরের দিকে করে সচরাচর মানুষের চোখে না দেখা যায় এমন স্থানে রাখা যেতে পারে।
স্নানঘরের মেঝেতে জুতার ময়লা লেগে থাকতে পারে। তাই কিছুক্ষণ পরপরই মপ দিয়ে এটা পরিষ্কার করে ফেলতে হবে, যাতে মেঝেতে দাগ লেগে না থাকে।
l কমোডের প্যানে প্রথমে পরিষ্কারক তরল ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দিয়ে ১০ মিনিট রেখে জীবাণুমুক্ত করা হয়।
l কমোডের সিট কভার, ট্যাংকের ওপরে ফ্ল্যাশের পাশে কাপড় ধোয়ার গুঁড়া সাবান ভরিয়ে ফোম দিয়ে ভালো করে মাজতে হবে।
l ১০ মিনিট পরে ব্রাশ করে কমোডের ওপরে ও মাঝে ভালোভাবে ঘষে পরিষ্কার করে নিতে হবে। কমোডের কোথাও রাসায়নিক দ্রব্য লেগে থাকলে হ্যান্ড শাওয়ার দিয়ে ধুয়ে ডাস্টার (সাদা কাপড়) দিয়ে মুছে পরিষ্কার করা হয়।
অনেক সময় কমোডে ঠিকমতো ফ্ল্যাশ না করার কারণে কমোডের ভেতরে টিস্যু আটকে থাকে, তখন গ্রিন প্যাড দিয়ে একটু ঘষা দিলেই টিস্যুটা ছিঁড়ে যায়। তারপর টিস্যুটা ফ্লাস করে দিতে হবে।
l মেঝের টাইলস মোছার আগে ভেতর থেকে টিস্যু পেপার বের করে রাখতে হবে।
l টিস্যু হোল্ডারটার ওপরে ডাস্টার দিয়ে মুছে ফেলতে হবে।
l প্রতিদিন গুঁড়া সাবান আর গরম পানিতে ডাস্টার ভিজিয়ে ভালো করে নিংড়িয়ে তারপর পরিষ্কার করে মুছে ফেলতে হবে।
l স্নানঘর থেকে সুন্দর গন্ধ আসার জন্য এয়ারফ্রেশনার, অটো এয়ারফ্রেশনার ব্যবহার করতে পারেন। অটো এয়ারফ্রেশনারে সময় সেট করে রাখলে ৫-১০ মিনিট পরপর ফ্লেভার পরিবর্তন হবে নিজে নিজেই।
যদি বাথটাব থাকে তবে বাথটাবটা গুঁড়া সাবান দিয়ে এমনভাবে পরিষ্কার করতে হয়, যেন বাথটাবের রংটা চকচকে হয়ে ওঠে।
l স্নানঘরের ঝুল প্রতিদিন পরিষ্কার করতে হবে।
l ওপরের ঝুল পরিষ্কার করে ফেলতে হবে।
l স্নানঘরের এগজস্ট ফ্যান ফুল ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করা যায়।
দু-তিন দিন পরপর এগজস্ট ফ্যান পরিষ্কার করতে হবে।
l এগজস্ট ফ্যানের ওপরের জালিটা নামিয়ে গ্রিন সেট ও গুঁড়া সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে ডাস্টার দিয়ে মুছে ফেলতে হবে।
l অনেক সময় দরজার ওপরে ময়লা আটকে থাকে। এক দিন পরপর গ্রিন প্যাড দিয়ে সেটা পরিষ্কার করতে হবে।
সূত্রঃ প্রথম আলো নকশা