২০২০ সালে বিবিসির সেরা ১শ’ নারীর তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন দুই বাংলাদেশি। এবার সেরা ১০০ নারী নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিবিসি যে বিষয়টি হাইলাইট করেছে তা হলো- যারা সমাজে পরিবর্তন আনতে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং মহামারির এ কঠিন সময়েও তাদের কাজের মাধ্যমে নিজেদের আলাদা করতে সক্ষম হয়েছেন।
বিবিসির ১শ’ নারীর তালিকায় স্থান পাওয়া বাংলাদেশের দুই নারীর একজন হলেন, যৌনকর্মী রিনা আক্তার এবং অন্যজন হলেন রিমা সুলতানা রিমু। তিনি একজন শিক্ষক এবং কক্সবাজারের ইয়াং উইমেন লিডার্স ফর পিস এর একজন সদস্য।
বিবিসি বলছে, এবার একশ নারী নির্বাচনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। যারা পরিবর্তন আনতে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং মহামারির এই কঠিন সময়েও তাদের কাজের মাধ্যমে নিজেদের আলাদা করতে সক্ষম হয়েছেন মূলত তাদেরকেই এই তালিকায় রাখা হয়েছে।
রিনা আক্তারকে মাত্র আট বছর বয়সে তার এক আত্মীয় একটি পতিতালয়ে বিক্রি করে দিয়েছিল। সেখানেই তিনি বেড়ে ওঠেন এবং পরে যৌনকর্মীর হিসেবে দিন কাটে রাত। কিন্তু এখন তিনি অন্য যৌনকর্মীদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন।
Advertisements
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও রিনা ও তার টিম ঢাকায় প্রতি সপ্তাহে অন্তত চারশো যৌনকর্মীকে খাবার সরবরাহ করেছেন। এসব যৌনকর্মী মহামারির কারণে চরম অর্থনৈতিক দুরবস্থায় পড়েছেন।
রিনা আক্তার বলেন, লোকজন আমাদের পেশাকে ছোটো করে দেখে। কিন্তু আমরা খাবার কেনার জন্যই এই পেশায় থাকতে বাধ্য হয়েছি। আমি চেষ্টা করছি যাতে এই পেশার কাউকে না খেয়ে না থাকতে হয় এবং তাদের বাচ্চাদের যেন এই অসম্মানজনক কাজ করতে না হয়।
অপরদিকে শিক্ষক রিমা সুলতানাও এই মহামারির মধ্যে কাজ চালিয়ে গেছেন। এই কর্মসূচি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অফ উইমেন পিসবিল্ডার্স এর অংশ। এর মূল উদ্দেশ্য সংঘাতপূর্ণ দেশগুলো থেকে আসা তরুণ নারীদের ক্ষমতায়ন করা যাতে করে তারা নেতৃত্ব দেয়া ও শান্তির দূত হিসেবে পরিণত হতে পারেন।
রিমা তার মানবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছেন রোহিঙ্গা শরণার্থী পরিস্থিতি মোকাবেলায়। রোহিঙ্গা শরণার্থী বিশেষ করে নারী ও শিশু যাদের শিক্ষার সুযোগ নেই তাদের জন্য লিঙ্গ সংবেদনশীল ও বয়সভিত্তিক স্বাক্ষরতা কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন তিনি।
রেডিও ব্রডকাস্ট ও থিয়েটার পারফরম্যান্সের মাধ্যমে নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ে জাতিসংঘের সিদ্ধান্তগুলো সম্পর্কে সচেতনতা তৈরিতেও কাজ করেছেন তিনি। এই শিক্ষক বলেন, বাংলাদেশ লিঙ্গ সমতা আনতে অঙ্গীকারবদ্ধ। অধিকার আদায়ের জন্য নারীর শক্তিতে আমি বিশ্বাস করি।